১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ সালে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি ও ২০২৫ সালের ডাকসু নির্বাচনে জিএস পদপ্রার্থী মেঘমল্লার বসু একটি ফেসবুক পোস্টে লিখেন যে ৫ আগস্টের পর এক বছরে "দেড়শর উপর মাজার ভাঙল" এবং "শত শত মন্দির পুড়ল"। তার পোস্টে তিনি এ সম্পর্কিত কোন প্রমাণ তিনি দেন নি এবং পোস্টের কমেন্ট সেকশনে অনেককে এই সংখ্যার ব্যাপারে প্রশ্ন করতে দেখা যায়।

The Dacca বিভিন্ন সংগঠন ও সরকারি সংস্থাসমূহের রিপোর্ট এবং বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশিত নিউজের উপর ভিত্তি করে ৫ আগস্ট পরবর্তী মাজার, দরগাহ ও মসজিদে হামলার সংখ্যা যাচাই করে। বিশ্লেষণের পর পোস্টে উল্লিখিত সংখ্যাগুলোকে 'অতিরঞ্জিত' বলা যায়।
প্রথমত ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন মাজার ও দরগাহে হামলার ঘটনার সংখ্যা বিশ্লেষণ করা হয়। বিভিন্ন মিডিয়া রিপোর্ট, সরকারি-বেসরকারি পরিসংখ্যান, মানবাধিকার সংগঠনসমূহের দাবি - ইত্যাদি সব আমলে নিয়ে The Dacca দেখতে পায় যে ৫ আগস্ট থেকে ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মাজারে হামলার সংখ্যা ৮৫ থেকে ১১০ এর মধ্যে।
এ সংখ্যা নিরুপণের জন্য প্রথমে বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিন (Google, Bing ও DuckDuckGo) ব্যবহার করে ৫ আগস্ট পরবর্তী যত মাজার বা দরগাহ-এ আক্রমণের খবর বিভিন্ন নিউজ মিডিয়াতে এসেছে সেগুলো কালেক্ট করা হয়। মাজারে হামলা, দরগাহে হামলা, মাজারে আক্রমণ, shrine attack, shrine vandalized সহ বিভিন্ন কীওয়ার্ড ব্যবহার করে বাংলা ও ইংরেজি মিলে ৪৮৮টি নিউজ আর্টিকেল কালেক্ট করা হয়। এরপর সেখান থেকে ডুপ্লিকেট রিপোর্টিং-গুলোকে সরিয়ে ফেলা হয়। ভেরিফাইড নিউজ মিডিয়া বাদে অন্য কোন মাধ্যমকে এখানে আমলে নেয়া হয় নি। সরাসরি হামলা বাদে মৌখিকভাবে চাপ প্রয়োগ করার কোন ঘটনাও এখানে ধর্তব্যে নেয়া হয়নি। এছাড়া ব্যক্তিগত শত্রুতাবশত ঘটানো একটি ঘটনা বাদ দেয়া হয়েছে।

মিডিয়া সূত্র থেকে মাজারে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করার সর্বমোট ৫৬টি ঘটনার বর্ণনা পাওয়া যায়। যার মধ্যে ২০২৪ সালে ঘটেছে ৪০টি এবং ২০২৫ সালে ঘটেছে ১৬টি। তবে সকল ঘটনা মিডিয়াতে আসে না বিধায় প্রকৃত ঘটনার সংখ্যা আরো বেশি বলে অনুমান করা যায়। এক্ষেত্রে পুলিশ ও মানবাধিকার সংগঠনসমূহের থেকে The Dacca তথ্য সংগ্রহ করে।
মিডিয়ায় আসা আক্রান্ত মাজার ও দরগাহ এর তালিকা
- বৈরাম শাহ মাজার — ঢাকা — ৫ আগস্ট ২০২৪
- গরিব শাহ মাজার — যশোর — ৫ আগস্ট ২০২৪
- দেওয়ান শরীফ খান মাজার — নরসিংদী — ৫ আগস্ট ২০২৪
- সাইয়দ রেজা শাহ (শাহ ভালা) মাজার — চুয়াডাঙ্গা — ৫ আগস্ট ২০২৪
- আশরাফনগর দরবার শরীফ — লাকসাম, কুমিল্লা — ৫ আগস্ট ২০২৪
- মলেক দরবেশ মাজার — লাকসাম, কুমিল্লা — আগস্ট ২০২৪
- আলী পাগলার মাজার — কাজীপুর, সিরাজগঞ্জ — ২৯ আগস্ট ২০২৪
- ইসমাইল পাগলার মাজার — সিরাজগঞ্জ — ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪
- দেওয়ানবাগ খানকা শরীফ — নারায়ণগঞ্জ সদর — ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪
- হানিফ পাগলার মাজার — নরসিংদী সদর — ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪
- দেওয়ানবাগ দরবার শরীফ — ত্রিশাল, ময়মনসিংহ — ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
- ৬টি দরগাহ (যোজরা দরবার শরীফসহ) — নাঙ্গলকোট, কুমিল্লা — ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
- ৮টি মাজার — নাঙ্গলকোট, কুমিল্লা — ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
- এ.টি.এস. মুহাম্মদ খলিলুর রহমান আল চিশতি নিযামী মাজার — রাজশাহী — ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
- শাহ পরান (রহ.) এর মাজার — সিলেট — ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
- বুচাই পাগলার মাজার — ধামরাই, ঢাকা — ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
- বরকত মায়ের মাজার — ধামরাই, ঢাকা — ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
- ফকির করিম শাহ (আর্শেদ পাগলা) মাজার — জাজিরা, শরীয়তপুর — ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪
- মজিদিয়া দরবার শরীফ (শালু শাহের দরগাহ) — নড়িয়া, শরীয়তপুর — ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪
- ফকির চারু মিজি (চারু মিজি) মাজার — নোয়াখালী — ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪
- পাঁচ পীর মাজার — ঢাকা — ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪
- শাহ সুফি ফসিহ পাগলার মাজার — পোড়াবাড়ি, গাজীপুর — ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪
- শাহ সুফি চান মিয়ার মাজার — পোড়াবাড়ি, গাজীপুর — ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪
- মাওলানা কাজী আফসার উদ্দিন বাবা — সাভার — ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪
- শাহ সুফি আব্দুল কাইয়ুমের মাজার — সিলেট — ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
- আয়নাল শাহের মাজার — নারায়ণগঞ্জ — ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
- হযরত বারোপীর গাউসুল আজম দরবার শরীফ — সিরাজগঞ্জ — ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
- মুর্শিদপুর দরবার — শেরপুর — ২৬ নভেম্বর ২০২৪
- কুতুববাগ দরবার শরীফ — ফার্মগেট — ২৭ জানুয়ারি ২০২৫
- শুকুর আলী শাহ — ধামরাই, ঢাকা — ২০ জানুয়ারি ২০২৫
- ৪টি মাজার — নরসিংদী — ২৩ জানুয়ারি ২০২৫
- মধু দরবেশ মাজার — চাটখিল, নোয়াখালী — ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
- সাইয়দ মুহাম্মদ শায়ার মুহাম্মদ শাহ আল-কাদরি মাজার — পেকুয়া, কক্সবাজার — ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
- আয়ুব আলী দরবেশ মাজার — নোয়াখালী সদর — ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
- রশিদ সরকার মাজার — সিংগাইর, মানিকগঞ্জ — ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
- রহিম ভান্ডারি মাজার — ঘোড়াঘাট, দিনাজপুর — ১ মার্চ ২০২৫
- শাহ নওয়াজ ফকির (ল্যাংটা ফকির) মাজার — কেন্দুয়া, নেত্রকোণা — ৩ মার্চ ২০২৫
- হেকিম শাহ মাজার — আজমিরিগঞ্জ, হবিগঞ্জ — ৭ মার্চ ২০২৫
- ইসমাইল শাহ মাজার — আমতলী, বরগুনা — ১৭ মার্চ ২০২৫
- নুরুল হক (নুরাল পাগলা) মাজার — গোয়ালন্দ, রাজবাড়ী — ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
- আজিজ ভান্ডারি খানকা শরীফ — রাজশাহী — ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
২০২৫ সালের ১৮ জানুয়ারি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জানায় যে ২০২৪ সালে মাজারে হামলা করার ৪০টি ঘটনায় মোট ৪৪ টি মামলা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে সরকারের দেয়া তথ্য এবং মিডিয়া বিশ্লেষণে প্রাপ্ত তথ্য একই মনে হলেও The Dacca অধিকতর বিশ্লেষণ করে। পুলিশের মতে ময়মনসিংহ বিভাগে হামলার সংখ্যা ৭টি হলেও মিডিয়াতে ৩টির কথা এসেছে। অন্যদিকে চট্টগ্রাম বিভাগে পুলিশের মতে ১০টি ঘটনা থাকলেও মিডিয়াতে ১৭টির তথ্য পাওয়া যায়। তবে ঢাকা বিভাগের জন্য প্রাপ্ত তথ্য সামঞ্জস্যপূর্ণ।
ব্যারিস্টার সুলতানা কামাল প্রতিষ্ঠিত মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন এর মতে ২০২৪ সালে হামলার শিকার হওয়া মোট মাজারের সংখ্যা ৩১টি। তবে বিশ্ব সূফী সংস্থা - Global Sufi Organization নামক আরেকটি সংগঠন, যারা বাংলাদেশের ৫০০০ এর বেশি মাজার ও দরগাহর সাথে সংযুক্ত বলে দাবি করে, ২২ জানুয়ারি একটি সংবাদ সম্মেলনে জানায় যে ২০২৪ সালে বিভিন্ন সময়ে ৮০টি মাজারে হামলা হয়েছে। বিশ্ব সুফী সংস্থা তাদের প্রাপ্ত ৮০ টি ভুক্তভোগী মাজারের ব্যাপারে কোন তথ্য দেয় নি। মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন তাদের তথ্য সংগ্রহ প্রক্রিয়া প্রকাশ করে নি।
সব বিশ্লেষণ করে ২০২৪ সালের আগস্ট থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন মাজারে হওয়া হামলার সংখ্যা ৬৫-৭০টি হতে পারে বলে ধারণা করে যায়।

২০২৫ সালের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এখনো এমন কোন তালিকা প্রকাশ করে নি। একইভাবে মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন জানুয়ারি ২০২৫ এ কোন হামলার কথা প্রকাশ করে নি। ফেব্রুয়ারি ২০২৫ এ তারা ২ টি হামলার কথা প্রকাশ করেছে এবং বা তার পরবর্তী কোন মাসিক রিপোর্টে মাজারে হামলার ব্যাপারে কোন তথ্য প্রদান করে নি। বিশ্ব সূফী সংস্থাও বাকিদের অনুরূপ কোন একত্রিত তথ্য প্রদান করে নি। তবে তাদের ফেসবুক পেজ থেকে বিভিন্ন সময়ে প্রকাশিত প্রেস রিলিজ থেকে বিভিন্ন এলাকায় মাজারে হামলার কথা জানা যায় যেগুলো মিডিয়াতে প্রকাশ পায় নি।
২০২৫ এর ১ জানুয়ারি থেকে ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মিডিয়া বিশ্লেষণ করে The Dacca মোট ১৬ টি ঘটনা পেয়েছে। এর মধ্যে ৬টির তথ্য বিশ্ব সূফী সংস্থার পেজেও পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে পর্যাপ্ত তথ্য-উপাত্ত না থাকায় নির্ভুল অনুমান করা সম্ভব নয়। তবে পূর্বে প্রাপ্ত তথ্যের ওপর ভিত্তি করে ২০২৫ সালে ঘটা মাজারে হামলার ঘটনা ২০ থেকে ৪০ এর মধ্যে হতে পারে বলে ধারণা করা যায়।
সবকিছু বিশ্লেষণ করে বলা যায় যে, ২০২৪ সালের আগস্ট থেকে ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়কালে মাজারে আক্রমণের সংখ্যা ৮৫ থেকে ১১০ এর মধ্যে হতে পারে।
গত এক বছরে 'শত শত' মন্দিরে আগুন লাগার ব্যাপারটিও সত্য নয়। এই সময়কালে মন্দিরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ৫টি। তবে অগ্নিকাণ্ড বাদে অন্যান্য হামলা লুটপাট ইত্যাদি সব মিলিয়ে হামলার সংখ্যা শতাধিক।
মাজার ও দরগাহে আক্রমণের ঘটনাগুলোর মতোই বিশ্লেষণের জন্য The Dacca প্রথমে বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিন (Google, Bing ও DuckDuckGo) থেকে মন্দিরে আগুন, প্রতিমায় আগুন, temple burned সহ বিভিন্ন কীওয়ার্ড ব্যবহার করে ৫ আগস্ট থেকে ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশের কোন মন্দিরে আগুন লাগা সংক্রান্ত সকল নিউজ সংগ্রহ করে। এক্ষেত্রে ভেরিফাইড নিউজ মিডিয়া বাদে অন্য কোন মাধ্যমকে এখানে আমলে নেয়া হয় নি। প্রাপ্ত ২১টি নিউজ আর্টিকেল থেকে ডুপ্লিকেট নিউজগুলোকে বাদ দেয়া হয়। এছাড়া কমিটি সংক্রান্ত বিরোধের কারণে হওয়া একটি ঘটনা বাদ দেয়া হয়। তবে মানিকগঞ্জের একটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় প্রশাসন বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট এর ধারণা করলেও সেটিকে তালিকায় রাখা হয়েছে। একইভাবে কোন পরিকল্পিত আক্রমণের প্রমাণ না থাকলেও দিনাজপুরের একটি ঘটনাও তালিকায় রাখা হয়েছে। এছাড়া একটি অগ্নিকান্ডের ঘটনা পরবর্তীতে ভুয়া প্রমাণিত হওয়ার কারণে বাদ দেয়া হয়।
অগ্নিকান্ডের শিকার মন্দিরসমূহের তালিকা
- শ্রীশ্রী মহাভাগ্য লক্ষ্মী নারায়ণমন্দির — তুরাগ, ঢাকা — ৭ ডিসেম্বর ২০২৪
- পারিবারিক মন্দির — কাশিয়ানি, গোপালগঞ্জ — ২১ জানুয়ারি ২০২৫
- দুর্গা মন্দির — দিনাজপুর — ২৭ মার্চ ২০২৫
- কালী মন্দির — মানিকগঞ্জ — ২৮ মে ২০২৫
- শ্রীশ্রী মহাশ্মশান কালী ও শিবমন্দির — সীতাকুণ্ড — ১ জুন ২০২৫
৫ আগস্ট পরবর্তীতে বিভিন্ন মিডিয়া বিশ্লেষণ করে মন্দিরে অগ্নিকাণ্ডের ৫টি ঘটনা পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ২০২৪ সালে ঘটেছে ১ টি এবং ২০২৫ সালে ঘটেছে ৪টি। ৫ টি ঘটনার মধ্যে স্পষ্টত নাশকতার প্রমাণ রয়েছে ৩টি-তে। তবে ২০২৫ সালে বিভিন্ন পারিবারিক ও স্থানীয় মন্দিরে অগ্নিকাণ্ড ঘটে নি এমন হামলার মোট ২৫ টি নিউজ পাওয়া গেছে।
তবে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ তাদের একটি বিস্তারিত রিপোর্টে দাবি করে যে ৪ আগস্ট থেকে ২০ আগস্টের মধ্যে মন্দিরে হামলা, লুটপাট ও অগ্নিকান্ডের ৫৯টি ঘটনা ঘটেছে। তারা এ ঘটনাগুলো বিভিন্ন নিউজ ও সোশাল মিডিয়া থেকে সংগ্রহ করেছে বলে জানায়। The Dacca উক্ত রিপোর্টে উল্লিখিত প্রতিটি ঘটনা বিশ্লেষণ করে এবং এর মধ্যে ৩১টি ঘটনাকে সম্ভাব্য সাম্প্রদায়িক হামলা হিসাবে চিহ্নিত করে। এছাড়া মন্দিরে হামলার ঘটনার বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পরিষদ তাদের রিপোর্টে কোন তথ্যসূত্র প্রদান করে নি।
একইভাবে তারা ২১ আগস্ট থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৬৪টি এবং ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ৫৯ টি মন্দির/উপাসনালয় সংক্রান্ত অপরাধ (হামলা, ভাঙচুর, চুরি ইত্যাদি) হয়েছে বলে দাবি করে। অর্থাৎ এক বছরে মোট ১৮২টি হামলা হওয়ার দাবি করে।
বাংলাদেশ পুলিশে এ ব্যাপারে জানায় যে ২০২৫ এর জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত কৃত অভিযোগের মধ্যে ২৮টি ঘটনার সত্যতা রয়েছে, যার মধ্যে ৪টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা। পুলিশের দাবি The Dacca এর সংগৃহীত নিউজের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
এছাড়া পূর্বের বিশ্লেষণ ও অন্যান্য রিপোর্ট আমলে নিলে দেখা যায় যে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ এর দাবিসমূহ প্রায়ই অতিরঞ্জিত হয়ে থাকে। পূর্বেও তারা সাম্প্রদায়িক হামলায় ৯ জন নিহত হওয়ার দাবি করে যা পরবর্তীতে মিথ্যা প্রমাণিত হয়। The Dacca এর এই রিপোর্ট এবং পুলিশের তদন্তেও এই অতিরঞ্জনের বিষয়টি উঠে আসে।
পুলিশের বক্তব্য, সংবাদ বিশ্লেষণ এবং ঐক্য পরিষদের রিপোর্ট বিশ্লেষণের মাধ্যমে অনুমান করা যায় যে ২০২৪ সালের আগস্ট থেকে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত মন্দিরে হামলার সংখ্যা ১০০ থেকে ১৪০ এর মধ্যে থাকতে পারে।

প্রাপ্ত সকল তথ্য, নিউজ আর্টিকেল, বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি সংস্থার তথ্য ও উপাত্ত পর্যালোচনা করে বলা যায়, ২০২৫ সালের ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে ৮৫ থেকে ১১০ টি মাজার ও দরগাহে হামলার ঘটনা এবং ১১০ থেকে ১৪০ টি মন্দির সংক্রান্ত হামলার ঘটনা ঘটেছে।