গত ৬ অক্টোবর ২০২৫ তারিখ ব্রিটিশ দৈনিক Financial Times তাদের একটি রিপোর্টে উল্লেখ করে যে ২০০১-২০০৬ সালে বিএনপি টানা ৫ বছর দুর্নীতিতে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়। একই দিন ঢাকার জিগাতলায় ঢাকা-১০ আসনে দাঁড়িপাল্লা প্রতীকের পক্ষে গণসংযোগপূর্বক পথসভায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি শফিকুল ইসলাম মাসুদ একই কথা বলেন। এছাড়াও পূর্বে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ব্যক্তি (https://archive.is/QYKrw, https://archive.is/uto4f, https://archive.is/umlbR) এই ধরণের বক্তব্য প্রদান করেছেন।
এর প্রেক্ষিতে ৭ অক্টোবর ২০২৫ তারিখ Transparency International Bangladesh (TIB) একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রদান করে। সেখানে তারা জানায় যে বাংলাদেশের অবস্থান সর্বনিম্ন ছিল ২০০১ সালে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় থাকাকালীন। পরবর্তী ৪ বছর এ অবস্থান অপরিবর্তিত ছিল। পরবর্তীতে Financial Times তাদের প্রকাশিত রিপোর্ট সংশোধন করে।
১৯৯৫ সাল থেকে টিআই দুর্নীতির ধারণা সূচক প্রকাশ করে আসছে। বাংলাদেশ ২০০১ সালে প্রথম এই সূচকের অন্তর্ভুক্ত হয় এবং সেবারই তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ছিলো সর্বনিম্ন। তখন ক্ষমতায় ছিলো আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার। এরপর ২০০৫ সাল পর্যন্ত টানা চার বছর সূচকের অন্তর্ভুক্ত দেশসমূহের মধ্যে বাংলাদেশের সর্বনিম্ন অবস্থান অপরিবর্তিত ছিলো। তখন ২০০২ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলো বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট। এক্ষেত্রে বিএনপির শাসনামলের টানা পাঁচ বছর দুর্নীতির ধারণা সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান সর্বনিম্নে ছিলো- ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকর্তৃক প্রকাশিত এ তথ্য সঠিক নয়।
— Transparency International Bangladesh (7 October 2025)
This article has been amended to reflect the number of years that Bangladesh was ranked the world’s most corrupt country by Transparency International while the BNP was in power.
— Financial Times (7 October 2025)
TIB এর এই প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানায় যে "পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন" অপপ্রচারটি অসত্য এবং এর দায় সরাসরি বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের নয়। বরং প্রথমবার সর্বনিম্ন অবস্থানের পেছনে আওয়ামীলীগ সরকারই দায়ী।
The Dacca টিম Transparency International এর ২০০১ থেকে ২০০৫ এর Corruption Perception Index র্যাংকিং ও সূচক সংগ্রহ করেছে। এক্ষেত্রে দেখা যায় যে ২০০১ সালে বাংলাদেশ এর স্কোর ছিল 10 এর মধ্যে 0.4 এবং বাংলাদেশ ৯১টি দেশের মধ্যে দুর্নীতিতে প্রথম হয়েছিল।
২০০২ সালে স্কোর বেরে দাঁড়ায় 1.2 এবং বাংলাদেশ ১০২ টি দেশের মধ্যে দুর্নীতিতে প্রথম হয়। ২০০৩, ২০০৪ ও ২০০৫ সালে স্কোর ছিল যথাক্রমে 1.3, 1.5 ও 1.7। এর মধ্যে ২০০৩ সালে এককভাবে এবং ২০০৪ ও ২০০৫ সালে যৌথভাবে দুর্নীতিতে প্রথম হয়। ২০০৬ সালে স্কোর হয় 2 এবং দুর্নীতিতে ১ম অবস্থান থেকে ৮ম অবস্থানে উন্নীত হয়।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল এর প্রদত্ত তথ্য ও তাদের দাবি অনুযায়ী বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে আওয়ামীলীগের আমলে বাংলাদেশ প্রথমবার দুর্নীতিতে প্রথম হলেও পরবর্তীতে জোট সরকারের সময়ে ধীরে ধীরে অবস্থার উন্নতি ঘটে।
